পোস্টগুলি

মে, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

পশ্চিমবঙ্গের দীর্ঘতম

ছবি
পশ্চিমবঙ্গের দীর্ঘতম জিনিসের তালিকা: *দীর্ঘতম নদী: গঙ্গা (ভাগীরথী), পশ্চিমবঙ্গে দৈর্ঘ্য প্রায় ৫২০ কিমি। *দীর্ঘতম সেতু: জয়ী সেতু, তিস্তা নদীর উপর, কোচবিহার, দৈর্ঘ্য প্রায় ২.৭ কিমি। *দীর্ঘতম কেবল সেতু: বিদ্যাসাগর সেতু (দ্বিতীয় হুগলি সেতু), কলকাতা, দৈর্ঘ্য ২,৭০০ ফুট। *দীর্ঘতম জাতীয় সড়ক: ৩৪ নং জাতীয় সড়ক, ডালখোলা থেকে কলকাতা, দৈর্ঘ্য ৪৪৩ কিমি। *দীর্ঘতম রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম: খড়গপুর রেল স্টেশন, দৈর্ঘ্য ১,০৭২.৫ মিটার। *দীর্ঘতম বাঁধ: ফারাক্কা বাঁধ, গঙ্গা নদীর উপর, দৈর্ঘ্য ২,২৪৫ মিটার। *দীর্ঘতম সড়ক সেতু: শরৎ সেতু (কোলাঘাট ব্রিজ), দৈর্ঘ্য উল্লেখযোগ্য। *দীর্ঘতম উড়ালপুল: মা উড়ালপুল, কলকাতা, দৈর্ঘ্য ৯.২ কিমি (মোট), ৪.৫ কিমি (প্রধান অংশ)।  *দীর্ঘতম ট্রেন রুট: দার্জিলিং হিমালয়ান রেল (টয় ট্রেন), শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং, দৈর্ঘ্য ৮৬ কিমি * উপকূলরেখা: পশ্চিমবঙ্গের উপকূলরেখা, সুন্দরবন থেকে ওড়িশা সীমান্ত, প্রায় ১৫৭ কিমি। *দীর্ঘতম রাজনৈতিক শাসনকাল: বামফ্রন্ট সরকার, ৩৪ বছর (১৯৭৭-২০১১), বিশ্বের দীর্ঘতম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কমিউনিস্ট সরকার। *দীর্ঘতম রাজ্য সড়ক: রাজ্য সড়ক, মোট দৈর্ঘ্য ২...

সুফীজম

ছবি
### সুফিবাদ কাকে বলে? সুফিবাদ (ইংরেজি: Sufism; আরবি: تصوف, তাসাউফ) হলো ইসলামের আধ্যাত্মিক ও রহস্যবাদী মাত্রা, যা মানুষের আত্মার পরিশুদ্ধি, ঐশ্বরিক প্রেম এবং আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের উপর গুরুত্ব দেয়। এটি ইসলামের অভ্যন্তরীণ বা বাতিনি দিক হিসেবে বিবেচিত হয়, যেখানে বাহ্যিক শরিয়াহ পালনের পাশাপাশি আধ্যাত্মিক অনুশীলনের মাধ্যমে ঈশ্বরের সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করা হয়। সুফিরা বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহর সাথে সরাসরি আধ্যাত্মিক সংযোগ স্থাপন সম্ভব, এবং এর জন্য তারা ধ্যান, জিকির (আল্লাহর নাম স্মরণ), কবিতা, সঙ্গীত, নৃত্য এবং বিভিন্ন আধ্যাত্মিক অনুশীলনের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি ও ঐশ্বরিক প্রেমের পথে অগ্রসর হন। সুফিবাদের মূল লক্ষ্য হলো: - **আত্মশুদ্ধি**: নফস (আত্মার কামনা-বাসনা) নিয়ন্ত্রণ করা। - **ফানা ও বাকা**: নিজেকে আল্লাহর ইচ্ছায় সমর্পণ করা (ফানা) এবং আল্লাহর মধ্যে অস্তিত্ব লাভ করা (বাকা)। - **মা’রিফাত**: আল্লাহর প্রতি গভীর জ্ঞান ও বোধ লাভ। ### বিভিন্ন তরিকার নাম ও ব্যাখ্যা সুফিবাদের বিভিন্ন তরিকা (আধ্যাত্মিক পথ বা সম্প্রদায়) রয়েছে, যার প্রতিটি নির্দিষ্ট শিক্ষক বা পীরের শিক্ষা ও পদ্ধতির ওপ...

ইসলামের চার মাজহাব

ছবি
চার ইমামের মতানুসারে ইসলামি বিধান বলতে সাধারণত সুন্নি ইসলামের চারটি প্রধান ফিকহী মাযহাব (আইনি সম্প্রদায়) বোঝায়, যেগুলো হলো: **হানাফি**, **মালিকি**, **শাফিঈ**, এবং **হাম্বলি**। এই চার ইমাম—ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, ইমাম শাফিঈ এবং ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল—ইসলামি শরিয়া বা ফিকহের ব্যাখ্যায় তাদের নিজ নিজ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাদের মতভেদ থাকলেও মূল উৎস একই: **কুরআন**, **হাদিস**, **ইজমা** (ঐকমত্য), এবং **কিয়াস** (যুক্তিবিচার)। নিচে চার ইমামের মতভেদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং তাদের ফিকহী পদ্ধতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো: ### ১. **হানাফি মাযহাব (ইমাম আবু হানিফা)** - **প্রতিষ্ঠাতা**: ইমাম আবু হানিফা (৬৯৯-৭৬৭ খ্রি.) - **ভৌগোলিক বিস্তার**: তুরস্ক, ভারতীয় উপমহাদেশ, মধ্য এশিয়া, এবং কিছু আরব দেশে প্রচলিত। - **বৈশিষ্ট্য**:   - যুক্তি ও কিয়াসের উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়।   - স্থানীয় রীতিনীতি (উরফ) এবং জনস্বার্থ (ইস্তিহসান) বিবেচনা করা হয়।   - হাদিসের ক্ষেত্রে কঠোর সনদ পরীক্ষা করা হয়, তবে তুলনামূলকভাবে কম হাদিস গ্রহণ করা হয়। - **উদাহরণ**:   - নামাজে মহিলাদের পিছনে ...

ইসলামিক মতে পুরুষ ও মহিলা পোশাকের বিধান এবং হিজাব বুরখা কি বাধ্যতামুলুক

ছবি
ইসলামিক মতে পুরুষ ও মহিলার পোশাকের বিধান কুরআন, হাদিস এবং ইসলামি শরিয়াহর নির্দেশনার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। এই বিধানগুলোর উদ্দেশ্য হলো লজ্জাস্থান ঢাকা, শালীনতা বজায় রাখা এবং সমাজে পবিত্রতা ও নৈতিকতা প্রতিষ্ঠা করা। নিচে পুরুষ ও মহিলার পোশাকের বিধান সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো:পুরুষের পোশাকের বিধানলজ্জাস্থান ঢাকা (সতর): পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশ ঢেকে রাখা ফরজ। এটি ন্যূনতম সীমা, তবে শালীনতার জন্য এর চেয়ে বেশি ঢাকা উত্তম।শালীন পোশাক: পোশাক এমন হওয়া উচিত যা শরীরের গঠন প্রকাশ না করে এবং যা সমাজে শালীন ও সম্মানজনক বলে গণ্য হয়। টাইট বা স্বচ্ছ পোশাক পরা নিষিদ্ধ।নারীসুলভ পোশাক নিষিদ্ধ: পুরুষের জন্য নারীদের পোশাক বা তাদের স্টাইল অনুকরণ করা হারাম। (হাদিস: সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৫৮৮৫)বিলাসিতা ও অহংকার এড়ানো: পোশাক অহংকার বা বিলাসিতা প্রকাশ করবে না। সোনার গহনা বা খাঁটি রেশমের পোশাক পুরুষের জন্য হারাম। (হাদিস: সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২০৬৯)পরিচ্ছন্নতা: পোশাক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সাধারণ হওয়া উচিত। জুমার নামাজের জন্য উত্তম পোশাক পরার নির্দেশ রয়েছে। (সূরা আরাফ: ৩১)মহিলার পোশাকের বিধ...

লুপ্তপ্রায় শেরশাবদিয়া ভাষার বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত কিছু শব্দ

জমি-- ভুঁই আখ--- রাখ ইদ---রিদ খামার----খৈলহ্যান উঠোন----এ্যগন্যা বারান্দা----ওসরা বাড়ির পেছন----কাঁন্টা দরজা----দুয়ার জানালা----জান্না/জালনা বিছানা----বিছ্যান কাঁথা----ক্যাঁথা মোটা কাঁথা----গাদলা লেপ----লেহেলী উনুন/চুলো----আখা,চুলহ্যা হাঁসুয়া----হ্যাঁস্স্যা, হোঁস্যা বটি----বোঠি বড়ো বাটি ----খোরা ছোটো বাটি--- খুরি থালা----থালি পোড়ামাটির গামলা----সানকি/হাধানি লোহার কড়াই----লোইহ্যা ছুলনি----ছেঁচকি হাঁড়ি মোছার কাপড়----লুতা, লাতা ছিপের সুতো----ডোঁড় কাঁথার সুতো----ধাগা মসারী----মসোরি/মুসারী ছুতোর----কাটমিস্ত্রি/কাঠমিস্ত্রি ঘরামি----ঘরামু বৃদ্ধবৃদ্ধা----বুঢ়াবুঢ়ি কোমর----মাঞ্জা/কমোর তলপেট---কোখ্ হাঁটু----হ্যাঁইঠ্যা গোড়ালি----গুল্লা কাঁধ----ঘাড় নাক----লাক্ উরু----জাং আঙুল----লোগ নখ----কুনি কনুই----কাহিন্যা রোগাক্রান্ত ----ব্যারামী জাহাজ----জাহাদ লুঙ্গি ----তহামুন, তহাবুন রুমাল----রুমাল/উরমাল তোয়ালা/তোয়ালে----তয়ল্যা পেট্রোল----পেট্টুল কেরোসিন ----কেরাচিন সরষে/সরিষা----সৈরষ্যা কালো সরষে----রাই ইঁদুর ----এঁন্দুর/এনুর ছুঁচো----ছুঁছা/ছুঁচা বোলতা----বোল্লা মৌমাছি ----মধুমাচ্ছি কোকিল---...

ইসলামী মতে স্বামী-স্ত্রীর অধিকার ও কর্তব্য ও তথ্যসহ বিশ্লেষণ ও স্ত্রীর ধর্মীয় অধিকার

ছবি
ইসলামী শরিয়াহ অনুসারে স্বামী-স্ত্রীর অধিকার ও কর্তব্য একটি সুষ্ঠু, ন্যায়ভিত্তিক এবং পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এই অধিকার ও কর্তব্য কুরআন, হাদিস এবং ইসলামী ফিকহের আলোকে নির্ধারিত। নিচে এই বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ তথ্যসহ প্রদান করা হলো: --- ### **স্বামীর অধিকার** ইসলামে স্বামীকে পরিবারের প্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে এই দায়িত্বের সাথে কিছু অধিকারও দেওয়া হয়েছে। 1. **স্ত্রীর আনুগত্য**:    - স্ত্রীর উচিত স্বামীর প্রতি আনুগত্য করা, যতক্ষণ স্বামীর নির্দেশ আল্লাহর বিধানের পরিপন্থী না হয়।     - তথ্য: কুরআনে বলা হয়েছে, *“পুরুষেরা নারীদের উপর কিছুটা অগ্রাধিকার রাখে”* (সূরা নিসা, ৪:৩৪)। এখানে ‘অগ্রাধিকার’ বলতে পরিবারের নেতৃত্ব ও দায়িত্ব বোঝানো হয়েছে।    - উদাহরণ: স্বামীর বৈধ এবং ন্যায্য নির্দেশ মানা, যেমন পরিবারের সিদ্ধান্তে সহযোগিতা করা। 2. **স্ত্রীর দ্বারা ঘর ও সম্পদের হেফাজত**:    - স্ত্রীকে স্বামীর ঘর, সম্পদ এবং গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।    - তথ্য: হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, *“সর্বোত্তম স্ত্রী সেই, যে স্বাম...

এ -কার (ে) উচ্চারণ ব্যবহার ও নিয়ম

ছবি
‘এ’  কার এর উচ্চারণ ‘এ’ বর্ণটির দুরকম উচ্চারণ হয়: (i) স্বাভাবিক উচ্চারণ (i) বিকৃত উচ্চারণ (এ্যা)। বিকৃত উচ্চারণ (এ্যা) বাঙালিদের উচ্চারণ প্রবণতা থেকে যুক্ত হয়েছে। সংস্কৃতে বা হিন্দিতে এ্যা নেই।  স্বাভাবিক উচ্চারণ: দেহ (দেহো), বেশ(বেশ), শেষ (শেশ) ইত্যাদি।   বিকৃত উচ্চারণ: (এ্যা) এক (এ্যাক), দেখা (দ্যাখা), খেলা (খ্যালা) ইত্যাদি। এ উচ্চারণের অন্যান্য নিয়ম: (i) শব্দের প্রথমে অবস্থিত এ-এর পরে ই, ঈ, উ, ঊ, এ, ও য়, র, ল, শ,হ থাকলে উক্ত‘এ’ সোজা বা স্বাভাবিকভাবে উচ্চারিত হয়। একাল (একাল), এরূপ (এরূপ), কেহ (কেহো), একীভূত (একিভূতো), দেশ (দেশ), মেয়ে(মেয়ে), সেগুন (শেগুন), দেহ(দেহো), একি (একি), কেড়ে(কেড়ে), একূল (একুল), এশা(এশা) ইত্যাদি। (ii) শব্দের প্রথমে এ থাকলে এবং পরে অ বা আ থাকলে এ-কার এ্যা এর মতো উচ্চারিত হয়: যেমন (জ্যামোন), এখন(এ্যাখোন), এক (এ্যাক), পেঁচা(প্যাঁচা), খেলা (খ্যালা), ভেড়া(ভ্যাড়া), কেনা (ক্যানা), এমন(এ্যামন), বেটা (ব্যাটা) ইত্যাদি।   ব্যতিক্রম: সেবা (শেবা), সেথা(শেথা), সেরা (শেরা), লেখা(লেখা) ইত্...

আবদুল ওয়াহাব ধর্মীয় নেতা থেকে একছত্র ক্ষমতা অধিপত্য লাভ করল কিভাবে

ছবি
মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহাব কে ছিলেন? মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহাব (১৭০৩–১৭৯২) ছিলেন একজন আরব ধর্মীয় পণ্ডিত, সংস্কারক এবং ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি আরব উপদ্বীপের নাজদ অঞ্চলের উয়াইনা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হানবালি মাজহাবের একজন অনুসারী ছিলেন এবং ইসলামের একটি কঠোর, পিউরিটানিক্যাল ব্যাখ্যা প্রচার করেন, যা তৌহিদ (একত্ববাদ) এবং শিরক (বহুখোদাবাদ) পরিহারের উপর জোর দেয়। তাঁর মতে, তৎকালীন মুসলিম সমাজে বিভিন্ন বিদআত (ধর্মীয় উদ্ভাবন) এবং শিরক প্রচলিত ছিল, যেমন কবর পূজা, সুফি আচার-অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রথা, যা তিনি ইসলামের মূল শিক্ষার সাথে সাংঘর্ষিক মনে করতেন।তাঁর প্রধান গ্রন্থ, কিতাব আত-তৌহিদ (তৌহিদের বই), তাঁর ভাবধারার মূলনীতি ব্যাখ্যা করে। তিনি ইসলামকে তার মতে প্রাথমিক রূপে (সালাফি পদ্ধতি) ফিরিয়ে নিতে চেয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে "ওয়াহাবি" আন্দোলন হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তথ্যসূত্র:Natana J. DeLong-Bas, Wahhabi Islam: From Revival and Reform to Global Jihad (2004): আবদুল ওয়াহাবের জীবন ও ভাবধারার বিস্তারিত বিবরণ।David Commins, The Wahhabi Mission and Saudi Arabia (2006):  ওয়াহাবি...

বিশ্ব ইসলামে সুফীবাদের ভুমিকা

ছবি
সুফীবাদ ইসলামের একটি আধ্যাত্মিক ও রহস্যবাদী ধারা, যা ভারতীয় উপমহাদেশে এবং বিশ্বজুড়ে ইসলামের বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সুফী সাধকরা তাদের সহনশীলতা, ভক্তিমূলক প্রচার, স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে মিশ্রণ এবং মানুষের হৃদয়ে সরাসরি পৌঁছানোর ক্ষমতার মাধ্যমে ইসলামকে জনপ্রিয় করেছেন। নিচে ভারতীয় উপমহাদেশ এবং বিশ্বে সুফীবাদের ভূমিকা, এর তরিকা এবং তথ্যসূত্রসহ বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। ### **ভারতীয় উপমহাদেশে সুফীবাদের ভূমিকা** ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামের প্রাথমিক বিস্তার মূলত সুফী সাধকদের মাধ্যমে হয়েছিল, যারা ৮ম থেকে ১৩শ শতাব্দীর মধ্যে এখানে এসেছিলেন। তারা কঠোর ধর্মীয় প্রচারের পরিবর্তে ভালোবাসা, শান্তি, এবং আধ্যাত্মিকতার বার্তা নিয়ে এসেছিলেন, যা স্থানীয় জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল। #### **সুফীবাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য ও ভূমিকা** 1. **স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে মিশ্রণ**:      সুফীরা ভারতীয় সংস্কৃতি, ভক্তিবাদী আন্দোলন (যেমন, ভক্তি আন্দোলন) এবং স্থানীয় ধর্মীয় ঐতিহ্যের সাথে ইসলামের আধ্যাত্মিক বার্তাকে মিশ্রিত করেছিলেন। তারা সংগীত, কবিতা এবং নৃত্যের মাধ্যমে (যেমন কাওয়ালি...

ইসলাম ধর্মে শিক্ষার অধিকার ও আদেশ

ছবি
ইসলাম ধর্মে নারী ও পুরুষের শিক্ষার অধিকার ও আদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা কুরআন, হাদিস এবং ইসলামি ঐতিহ্যে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে।  ইসলাম জ্ঞানার্জনকে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য ফরজ (অবশ্য পালনীয়) হিসেবে ঘোষণা করেছে। এছাড়াও, ইতিহাস জুড়ে অনেক মুসলিম নারী স্কলার তাদের অবদানের মাধ্যমে ইসলামি জ্ঞান ও শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।  নিম্নে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো, তথ্যসূত্রসহ। ইসলামে নারী ও পুরুষের শিক্ষার অধিকার ও আদেশইসলাম ধর্মে শিক্ষার অধিকার নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য সমানভাবে স্বীকৃত। কুরআন ও হাদিসে জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব বারবার উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে লিঙ্গভিত্তিক কোনো বৈষম্য নেই। কুরআনের নির্দেশনা:কুরআনে জ্ঞানার্জনকে মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধির মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।  সূরা আল-মুজাদালাহ (৫৮:১১) এ বলা হয়েছে: “আল্লাহ তাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দেন, যারা ঈমান এনেছে এবং যাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে।” এই আয়াতে জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা হয়নি। সূরা আয-যুমার (৩৯:৯) এ বলা হয়েছে: “যারা জানে এবং যারা জানে না, তা...

ইসলাম ধর্মে শিশুদের শিক্ষার আদেশ ও গুরুত্ব

ছবি
  ইসলাম ধর্মে শিশুদের শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা কুরআন, হাদিস এবং ইসলামি ঐতিহ্যে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। ইসলাম শিশুদের শিক্ষাকে শুধুমাত্র ধর্মীয় জ্ঞানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ব্যাপক অর্থে জ্ঞানার্জন, নৈতিক গুণাবলি, এবং সামাজিক দায়িত্ববোধ গড়ে তোলার উপর জোর দেয়। নিম্নে ইসলামে শিশুদের শিক্ষার আদেশ, পদ্ধতি এবং এর গুরুত্ব বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো, তথ্যসূত্রসহ।ইসলামে শিশুদের শিক্ষার আদেশইসলাম ধর্মে শিক্ষা অর্জনকে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরজ (অবশ্য পালনীয়) ঘোষণা করা হয়েছে, এবং শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে এটি আরও বিশেষ গুরুত্ব পায়। কারণ শিশুরা সমাজের ভবিষ্যৎ এবং তাদের শিক্ষা ও লালন-পালনের মাধ্যমে একটি নৈতিক ও জ্ঞানী সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।কুরআনের নির্দেশনা:কুরআনে জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব বারবার উল্লেখ করা হয়েছে।  সূরা আল-আলাক (৯৬:১-৫)-এ, যা কুরআনের প্রথম ওহী, বলা হয়েছে: “পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন জমাট রক্ত থেকে। পড়ো, আর তোমার প্রভু অতি দয়ালু। যিনি কলমের মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি মানুষকে শিখিয়েছেন যা সে জানত না।” এই আয়াত শ...

সালাফি মতবাদের বিস্তার ও পশ্চিমা বিশ্বের অবদান

ছবি
সালাফি মতবাদের বর্তমান বিস্তারে সৌদি আরব এবং পশ্চিমা বিশ্বের অবদান একটি জটিল এবং বহুমুখী বিষয়, যা ধর্মীয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং ভূ-কৌশলগত প্রেক্ষাপটের সাথে সম্পর্কিত। সালাফি মতবাদ, যা প্রায়শই ওয়াহাবি ভাবধারার সাথে সম্পর্কিত, ইসলামের একটি কঠোর ব্যাখ্যা প্রচার করে, যা প্রাথমিক মুসলিম সম্প্রদায়ের (সালাফ) অনুসরণের উপর জোর দেয়। নিচে সৌদি আরব এবং পশ্চিমা বিশ্বের অবদান বিস্তারিতভাবে তথ্যসূত্রসহ আলোচনা করা হলো। --- ### **১. সৌদি আরবের অবদান সালাফি মতবাদের বিস্তারে** সৌদি আরব সালাফি মতবাদের বিস্তারে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছে, প্রধানত তাদের তেল-ভিত্তিক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। নিচে এর প্রধান দিকগুলো উল্লেখ করা হলো: #### **১.১. তেলের আয় ও ধর্মীয় প্রচারণা** ১৯৩৮ সালে সৌদি আরবে তেল আবিষ্কারের পর থেকে দেশটি তেল রপ্তানির মাধ্যমে প্রচুর অর্থনৈতিক সম্পদ অর্জন করে। এই অর্থ ব্যবহার করে সৌদি রাজপরিবার বিশ্বব্যাপী সালাফি মতবাদ প্রচারে বিনিয়োগ করে। তারা মসজিদ, মাদ্রাসা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ধর্মীয় সংগঠন প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থ প্রদান করে। - **মাদ্রাসা ও ...

সৌদ পরিবার ও ওয়াহাবিদের ক্ষমতা লাভের পূর্বে আরব বিশ্বে সুফিবাদ

ছবি
আরব জগতে সৌদি রাজপরিবারের উত্থানের পূর্বে, অর্থাৎ ১৮শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে (মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহাব ও আল-সৌদ পরিবারের জোটের আগে, ১৭৪৪ সালের পূর্বে), মুসলিম সমাজে পীর, খানকা, মাজার এবং সুফি ভাবাদর্শ ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। আরব উপদ্বীপ, বিশেষ করে হিজাজ (মক্কা ও মদিনা অঞ্চল), নাজদ, এবং আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে সুফি প্রথা ও সংস্কৃতি ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।  নিচে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা তথ্যসূত্রসহ দেওয়া হলো। ১. আরব জগতে সুফি ভাবাদর্শের প্রচলনসুফি ভাবাদর্শ, যা ইসলামের রহস্যবাদী দিকের উপর জোর দেয়, আরব জগতে ৮ম শতাব্দী থেকেই বিস্তার লাভ করেছিল। সুফিবাদ মূলত আধ্যাত্মিকতা, ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ এবং ভক্তিমূলক অনুশীলনের উপর গুরুত্ব দেয়। আরব উপদ্বীপে, বিশেষ করে হিজাজ এবং ইয়েমেনে, সুফি তরিকাগুলো (যেমন কাদিরিয়া, নকশবন্দিয়া, শাযিলিয়া) জনপ্রিয় ছিল। এই ভাবাদর্শ মুসলিম সমাজের বিভিন্ন স্তরে, বিশেষ করে সাধারণ মানুষের মধ্যে, গভীর প্রভাব ফেলেছিল। পীর ও শাইখ: সুফি পীর বা শাইখরা ধর্মীয় নেতা হিসেবে বিবেচিত হতেন, যারা তাদের অনুসারীদের আধ্যাত্মিক পথে পরিচালনা করতেন...