আলো আসে না সব জানালায়
আলো আসে না সব জানালায়
✍️ লেখক: জোনাকি
সামিম আহমেদ, মুর্শিদাবাদের নগর গ্রামের এক মধ্যবয়স্ক মানুষ। ইতিহাসে এম.এ, বিএড, ডিএড—শিক্ষায় যত উঁচুতে উঠেছেন, জীবনে তত নেমেছেন নিচে।
২০০৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে টিউশন শুরু করেন। সেই থেকে আজও পড়াচ্ছেন। বহু ছাত্রছাত্রী আজ প্রতিষ্ঠিত—ডাক্তার, উকিল, আন্তর্জাতিক গবেষক, নার্স, অধ্যাপক, এমনকি নেতা।
তবুও সামিম আহমেদের ঘরে অভাব। স্ত্রীর গহনা বিক্রি হয়েছে, বাজারে ধার, স্কুলে বেতন আট হাজার টাকা। ছাত্রদের উপহার নিতে লজ্জা লাগে, তবুও না নিলে তারা কষ্ট পায়।
কম শিক্ষিত বন্ধুরা আজ ব্যবসায়ী, গাড়ির মালিক, অথচ সামিম এখনও ভাঙা সাইকেলে চড়ে টিউশনি করতে যান।
তবে সরকারি অফিসে গেলেই দৃশ্য বদলে যায়। কেউ বলে, “স্যার, আপনি তো আমার বোনের শিক্ষক!”, কেউ বলে, “আপনার ছাত্র এখন পুলিশ, আপনাকে দেখে গর্ব হয়।”
“আমি পুতুল বানাই, জীবন দিয়ে। পুতুলগুলো নাচে, উড়ে যায় বিদেশে। আমি বসে থাকি অন্ধকার জানালার পাশে।”
একবার স্ত্রী বলেছিল, “তোমার ছাত্ররা বড় হয়েছে, কেউ তো সাহায্য করে না।” সামিম বলেছিলেন, “তারা মানুষ হয়েছে, এটাই আমার বেতন।”
এক ছাত্রকে একদিন বলেছিলেন, “স্যারকে মনে না রাখলেও চলবে, কিন্তু মানুষ হইয়ো। তবেই আমি মরেও বাঁচব।”
লেখকের কথা:
এই গল্পটি নিছক কল্পনা নয়, বাস্তব একজন শিক্ষককে কেন্দ্র করে লেখা। আমার নিজের শিক্ষককে কেন্দ্র করে লেখা। বাংলার হাজারো নিঃস্ব অথচ গর্বিত শিক্ষকের প্রতিনিধিত্ব করেন সামিম আহমেদ।
📚 আরও গল্প পড়ুন:
- 👉 “এক ফোঁটা আলো” – এক বৃদ্ধ মায়ের গল্প
- 👉 “ছায়া” – শহরের ভেতরে লুকানো নিঃসঙ্গতা
- 👉 “মায়ের মুখ” – যুদ্ধজয়ী ছেলের প্রত্যাবর্তন
🔖 SEO Tags:
#teacherstruggle #banglagolpo #murshidabadstory #reallifestory #unsungheroes #banglateacher #inspiration #জীবনসংগ্রাম
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন