রুবাই মুর্শিদাবাদ ভিত্তিক
১
আমে ভরা বাগান পাকে রোদ্দুরের হাসি,
শোলার ছোঁয়ায় গড়া শিল্পে মেলে ভালোবাসি।
তবু কেন কাঁধে ইট আর রোদে ঝলসে যাওয়া?
জানতে চায় বেলডাঙা, চুপ কেন প্রশাসন বাঁচি?
২
ছানাবড়ার জি আই ট্যাগ ছুঁয়েছে গর্ব করে,
আরিজিৎ গান গায়, বিশ্ব মুগ্ধ তার স্বরে।
তবু কেন হাত কাঁপে পরিযায়ী ট্রেন চড়ে?
পালাশীর প্রান্ত হাসে, গোপনে রক্ত ঝরে।
৩
কাঁসার ঘণ্টায় বাজে ইতিহাসের টান,
চারণ কণ্ঠে জেগে উঠে কবিতার গান।
তবু কেন বোঝে না কেউ মীরজাফরের ঘেন্না?
ভদ্রবেশে মুখ লুকায়, সত্য হারায় মান।
৪
পড়ুয়ারা চিকিৎসক, দেশ গড়তে চায়,
তবু কেন রাজমিস্ত্রি পরিচয় পায়?
রাখালদাস ইতিহাস খুঁড়লেও আজ,
খোঁজে না কেউ যে শিকড় কোথায়।
৫
ফারাক্কার জল বইছে অতীতের ধারা,
লিচুর গন্ধে জঙ্গীপুরে ঋতুর ছায়া।
তবু কেন অন্নহীন মা’র চোখে জল?
কে দেবে উত্তর, কে জানে মায়া?
৬
বইমেলার প্রথম সূর্য মুর্শিদাবাদে,
সাহিত্যের শিকড় মিশে থাকে হৃদয় পাতে।
তবু কেন শব্দ গিলে ফেলে নিঃশব্দ শহর?
কোথায় হারালো সেই আলো জ্বালার রাতে?
৭
মোহনলালের রক্তে ভেজা পলাশীর মাটি,
মীরমদনের ছায়ায় ওঠে প্রতিবাদের ঘাঁটি।
তবু কেন জগৎ শেঠ হাসে বুকে বিষ নিয়ে?
পথ হারায় চেতনা, দেয় নিঃশব্দ ঘাঁটি।
৮
ছাত্ররা আজ ডাক্তার, তবু ফেরে না গ্রামে,
জীবন কাটে ঘামে ভেজা ইট-বালুর ঘামে।
তবু কেন সব সোনার পাথর হয়ে যায়?
ইতিহাস কাঁদে, আধুনিকতা থামে।
৯
নবারুণের কলম বলেছিল বিস্ফোরণ,
তবু আজ নীরব সে প্রান্তরের মন।
পেছনে পড়ে থাকে কেবল শ্রমিক কাহিনী,
মুর্শিদাবাদ আজ শুধু অভিশাপের ধ্বনিনি।
১০
তবু কেন এত কিছু থেকেও নেই দাম?
নাম ছড়ায় শুধু মীরজাফরের নাম।
যে জেলাটি গড়েছে শিল্প, গড়েছে জ্ঞান,
সে জেলায় বয়ে যায় কেবল বঞ্চনার ট্রাম।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন