ধোঁয়ার ভিতর জীবন

"ধোঁয়ার ভিতর জীবন (২)"

...
শান্তি এখন আর আগের মতো নরম কথা বলে না। সে কেবল ক্লান্ত নয়, বিরক্তও—দিনরাত খেটে যখন সংসার চলে, তখন তার মনে হয়, অমিত যেন বোঝাই একটা বোঝা।

“সব মেয়ে কি না খেটে সংসার চালায়?” — মাঝে মাঝে খোঁটা দেয় শান্তি, চায়ের কাপটা একটু বেশি জোরে নামিয়ে।
“তুমি তো মাস্টার মানুষ ছিলে! আজকে দশ টাকাও রোজগার করতে পারো না!”

অমিত চুপ করে থাকে। কিছু বললে আরও কিছু কথা ফিরে আসে।
সে জানে, শান্তির কথাগুলো রাগ নয়, অভিমান। তবে সেই অভিমানে গলতি নেই—তবু সেটা কাটে না।

তন্ময় এবার স্কুলে যাচ্ছে। ইউনিফর্মের রঙ মলিন, জুতো সেলাই করা।
বাবা যখন স্কুলের কথা বলে, ছেলের চোখে প্রশ্ন—“তুমি তো আর মাস্টার না!”

এমন সময়েও অমিত চেষ্টা করে—বাজারে গিয়ে খোঁজ নেয়, কেউ পড়াতে চাইবে কি না। কেউ চায় না—একজন বেকার, যাকে লোকের মুখে শোনা যায় “স্ত্রী চালায়।”

কিন্তু রাতে যখন তন্ময় মায়ের কোলে ঘুমায়, অমিত এক কোণে বসে ভাবে—আমি কি সত্যিই অপ্রয়োজনীয় হয়ে গেলাম?

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শেরপুর: ইতিহাস ও বর্তমানের এক হৃদয়ছোঁয়া গল্প

শেরশাহবাদিয়া ভাষা: বাংলা ভাষার আঞ্চলিক রূপ না কি ভিন্ন একটি লোকভাষা?

সাবান। কোনটা কি ধরনের। সরকারি নির্দেশনামাতে সাবান সম্পর্কে কি বলা আছে জানতে পড়ুন...